যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের এক নারীকে গৃহকর্মীর চাকরির লোভ দেখিয়ে সৌদি আরবে নিয়ে যায় একটি চক্র। সেখানে তাকে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছিলো। যারা তাকে কিনেছিলো তারা শারীরিক নির্যাতন করতো এবং জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন চালাতো। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মুক্তি পান তিনি। এরপর দেশে ফিরে আসেন। এ অভিযোগে সোমবার (২০মার্চ) আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
বাদির আইনজীবী রুহিন বালুজ জানান, দুই জনকে আসামি করে মানবপাচার দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেছেন ওই নারী। আদালতের বিচারক গোলাম কবির অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আনারুল ইসলামের স্ত্রী মমতাজ বেগম ও তার ছেলে আব্দুর রহমান।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী অত্যন্ত দরিদ্র। তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে পূর্ব পরিচিত উল্লিখিত আসামিরা ৬০ হাজার টাকায় সৌদি আরবে নিয়ে গিয়ে গৃহকর্মীর চাকরি প্রলোভন দেখান। তাদের প্রস্তাবে তিনি রাজি হলে তারা মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেন, ভালো কাজ দিতে না পারলে খরচের ৬০ হাজার টাকাসহ ক্ষতিপূরণ দিবেন।
এরপর তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নেওয়ার পর চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি ওই নারীকে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেন আসামি মমতাজ বেগম ও আব্দুর রহমান। এরপর সৌদি আরবের বিমানবন্দর থেকে ওই নারীকে নিয়ে একটি ঘরের ভেতর আটকে রাখা হয়।
সেখানে ওই নারীর সাথে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন আব্দুর রহমান। পরে তাকে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়। তারপর ঐ নারীর জীবনে নেমে আসে আরও ভয়াবহ নির্যাতন। ভুক্তভোগী নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা তাকে মুক্তি দেয়।
এরপর ওই নারী সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় গত ২৫ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। বাড়ি আসার পর তিনি আসামি মমতাজ বেগম ও আব্দুর রহমানের কাছে তার দেয়া ৬০ হাজার টাকাসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এ সময় তারা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে তাকে গালিগালাজ দেন।
গত ৪ মার্চ সকালে ভুক্তভোগী নারী ফের আসামিদের বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তারা তাকে খুনজখমের হুমকি দেন। ফলে কোনো উপায় না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।