যশোরে রবিবার বিকেলে প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে তাণ্ডব চালিয়েছে যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। তাণ্ডবকালে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের পর তার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। একই সময় তছনছ করা হয়েছে জেলা বিএনপির কার্যালয়। এ ঘটনার পর যশোর শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।
রবিবার বিকেল চারটা থেকে এ তাণ্ডব শুরু হয়। এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে জেলা বিএনপির শীর্ষ চার নেতার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
যশোর কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত জানান, শনিবার রাতে পুলিশ যশোরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তার দলের ২৮ জন নেতা-কর্মীকে আটক করে। রবিবার আদালতে তিনি ওই নেতা-কর্মীদের সাথে দেখা করে বাড়িতে ফেরার পথে বিকেল চারটার দিকে তার ওপর হামলা করে তার গাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
অমিত অভিযোগ করেন, শহরের প্রধান কেন্দ্র দড়াটানায় প্রকাশ্যে তার গাড়ি থামিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে। এসময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা নিস্ক্রিয় ছিল।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, হামলার শিকার অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বাড়ি ফেরার কিছু সময় পর পোনে ৫টার দিকে হামলা চালানো হয় তার বাড়িতে। এখানে হামলাকারীরা ২ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে। এসময় প্রতিরোধ করা হলে হামলাকারীরা চলে যায়। এসময় হামলাকারীরা ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এর মধ্যে দুইটি দৈনিক লোকসমাজের। একটি ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবীর নান্টুর, অপরটি ম্যানেজার শামীমের।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে। তার মা অধ্যাপক নার্গিস বেগম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক। হামলাকালে তিনি বাড়িতে ছিলেন।
রবিউল আরও জানান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বাড়িতে হামলা চালানোর আগে হামলাকারীরা মিছিলসহ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, যে মিছিল থেকে হামলাগুলো চালানো হয়েছে তার নেতৃত্বে ছিলেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল ও যুবলীগ নেতা যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন মিলন।
এ বিষয়ে জানতে আনোয়ার হোসেন বিপুলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি মিটিংয়ে আছেন, পরে যোগাযোগ করবেন। ফোন ধরেননি জাহিদ হোসেন মিলন।
এর আগে গত শুক্রবার রাত দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা একাধিক মোটর গাড়ি ও মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এ হামলা চালায়।
শনিবার নিজের গাড়িতে হামলার পর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আমরা জেনেছি প্রশাসনের ছত্রছায়ায় সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের নেতৃত্বে যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর নয়ন, রাজিবুল, মিলন ও তাদের সহযোগীরা শুক্রবারের হামলায় অংশ নেয়।