আগামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তন ঘিরে ক্যাম্পাসে এখন থেকেই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পুরো ক্যাম্পাস মুখর সমাবর্তনপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের পদচারণায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), কলাভবন, অপরাজেয় বাংলা, রাজু ভাস্কর্য, বটতলা, সিনেট ভবন, মল চত্বর, কার্জন হলসহ ক্যাম্পাসের প্রায় সব পয়েন্ট গ্রাজুয়েটদের পদচারণায় মুখর থাকতে দেখা গেছে। কালো গাউন, সমাবর্তনের বিশেষ হ্যাট পরিহিত শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
গায়ে কালো গাউন আর মাথায় কালো হ্যাট পরে সেলফি, গ্রুপ ফটোসেশনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে সমাবর্তন প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের। কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে মুহূর্তগুলো স্মরণীয় করে রাখছেন, কেউ কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে, আবার অনেককেই দেখা গেছে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ছবি তুলছেন।
এছাড়া গ্রাজুয়েটদের গাউন, হ্যাট পরে ছবি তুলতে দেখা গেছে জুনিয়র শিক্ষার্থীদেরও। এভাবে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাস মাতিয়ে বেড়িয়েছেন তারা।
সমাবর্তনের অনুভূতি নিয়ে ঢাবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মুশফিক ফারজানা অরিন বাংলানিউজ ইনফোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি হয়েছিলাম তখন একটাই স্বপ্ন লালন করেছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষীয় সমাবর্তনটা আমাদের হবে। ভাগ্যে নির্মম পরিহাস করোনার করাল থাবায় সেই স্বপ্ন যখন প্রায় অস্তমিত ঠিক তখন দেরীতে হলেও পেয়েই গেলাম সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত আমাদের সমাবর্তন যদিও তা শতবর্ষীয় নয় তবুও কম কি। এই অনূভুতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। বলতে ইচ্ছে করছে, অবশেষে আমি পাইলাম ইহাকে যাহার মূল্য অপরিমেয়।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা বলেন, ৫১তম সমাবর্তনের সময় আমি ছিলাম ১ম বর্ষে। ক্যাম্পাসে কস্টিউম পরা গ্ৰাজুয়েট ভাইয়া আপুদের দেখে তখন মনে হয়েছিল এরকম সুন্দর একটা মুহুর্ত আমার লাইফেও তাহলে আসবে। আলহামদুলিল্লাহ এবারের ৫৩তম সমাবর্তন আমিও নিচ্ছি। নিজের মনের মতো করে সবার সাথে ইনজয় করছি।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেল বিজয়ী ফরাসি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জ্যাঁ তিরোল। ঢাবি শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমাবর্তনে অংশ নেবেন অধিভুক্ত সাত কলেজ এবং ঢাবির উপাদানকল্পে পরিচালিত অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি এক সভায় ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ৫৩তম সমাবর্তনের সব কর্মসূচি সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।