sayem sobhan anvir সায়েম সোবহান আনভীর anveer

বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর এর পরিবার দেশ ছেড়েছেন

বাংলাদেশ অপরাধ

দেশ ছেড়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর এর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছোট ভাইয়ের বউ। স্টাফ ও সহকারীসহ তাঁরা ৮ জন চার্টার্ড বিমানে দুবাই চলে গেছেন। আলোচিত মোসারাত জাহান মুনিয়া আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামি সায়েম সোবহান আনভীর।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ভাড়া বিমানে দেশ ছাড়েন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিসি ইমিগ্রেশন বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র।

মোসারাত জাহান মুনিয়া আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামি আনভীর। আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার তিন দিনের মাথায় তারা দেশ ছাড়লেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও অভিবাসন পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ভাড়া বিমানে একসঙ্গে সায়েমের পরিবারের ৮ সদস্য দেশ ছাড়েন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, বুধবার তারা একটি বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি নিয়েছেন।

sayem sobhan anvir wife সায়েম সোবহান আনভীর স্ত্রী
সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান ও ছেলে

জানা গেছে, ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিকেলে রওনা দেয়। এটির গন্তব্য দুবাইয়ের আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

যাত্রী তালিকা অনুযায়ী দেশ ছেড়েছেন- সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, তাদের দুই সন্তান, ছোট ভাই সাফওয়ান সোবহানের স্ত্রী ইয়াশা সোবহান এবং তাদের মেয়ে ও দুই পরিবারের ৩ জন গৃহকর্মী ডায়ানা হার্নানডেজ চাকানান্দো, মোহাম্মদ কাদের মীর ও হোসনে আরা খাতুন। এর আগে সায়েম সোবহান আনভীরের ছোট ভাই সাফওয়ান সোবহানও দেশ ছাড়েন।

গত ২৬ এপ্রিল মামলা হওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত। যদিও আনভীর দেশ ছেড়েছেন এমন গুঞ্জন রয়েছে।

sayem sobhan anvir family সায়েম সোবহান আনভীর পরিবার স্ত্রী সন্তান ahmed akbar sobhan chairman basundhara group
সুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর এর স্ত্রী সন্তান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবার সোবহান

এর আগে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশে যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। গত মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম এই আদেশ দেন।

আনভীরের বিদেশ যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক মোল্লা আবুল হাসান। আবেদনে সাড়া দিয়ে বিচারক আগামী ৩০ মের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ডেটা বেজের তথ্য অনুযায়ী সায়েম সোবহান আনভীর দেশেই আছেন। তিনি দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। কোনোটি ব্যবহার করেই দেশত্যাগের কোনো তথ্য নেই।

উল্লেখ্য, রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর মুনিয়ার বড় বোন সোমবার গভীর রাতে এই মামলা করেন।

মৃত তরুণীর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার মনোহরপুরের উজীর দীঘির পাড়ে৷ সে রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান।

পুলিশের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, সোমবার সন্ধ্যার দিকে গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাট থেকে ওই তরুণীর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

মামলার বরাত দিয়ে উপকমিশনার বলেন, ‘মেয়েটির সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সম্পর্ক দুই বছরের। আনভীর এক বছর মেয়েটিকে বনানীর ফ্লাটে রাখেন। পরে আনভীরের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি কুমিল্লায় চলে যান। তবে মার্চ মাসে ঢাকায় এসে গুলশানের ওই ফ্লাটে থাকা শুরু করেন।’

তিনি বলেন, ‘২৩ এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় ওই বাসায়। ওই পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হলে মেয়েটির সঙ্গে আনভীরের মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যে কোনো মুহূর্তে তার যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে।’

এই ফোনের পর কুমিল্লায় থেকে সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। তবে গুলশানের ফ্লাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তরুণী ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

উপকমিশনার সুদীপ বলেন, ‘সাক্ষ্য প্রমাণ হাতে আসলে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে উপকমিশনার বলেন, ‘চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই ফ্লাটের মাসিকভাড়া ১ লাখ টাকা। এবং অগ্রিম দেয়া হয়েছে দুই লাখ টাকা। এরই মধ্যে দুই মাসের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে।’