যশোরে বিয়ের দেড়মাস পর এক কলেজ ছাত্রীসহ আরো দুই ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে গতকাল তাদের লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঝিকরগাছা থানা পুলিশ জানিয়েছে, গলায় ফাঁস দিয়ে উপজেলার সাগরপুর গ্রামে মিনারা খাতুন ওই গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী। ১ম মাস ১৪ দিন আগে বাবুলের সাথে তার বিয়ে হয়। শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার ৪দিন পর তার মৃত্যু হয়।
মিনারা একই উপজেলার শিয়ালকোনা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস সরদারের কন্যা। এইচএসসি পাশ করার পর কিছুদিন আগে মিনারা খাতুন যশোর শহরতলীর ধর্মতলায় বেসরকারি পলিটেকটিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। সেখানে পড়ালেখার মধ্যে তার বিয়ে হয়। মৃত্যুর পর ঝিকরগাছা থানার এসআই রাকিব হোসেন তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
তার গলায় ফাঁস দেয়ার দাগ রয়েছে বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
স্বামী পক্ষ দাবি করেছে, ঘরের ভেতর ফ্যানের হুকের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মিনারা খাতুন। অন্যদিকে তার পিতা আব্দুল কুদ্দুস সরদার জানিয়েছেন, ১ মাস ১৪ দিন বিয়ে হওয়ার পর ৩বার মিনারা শ্বশুর বাড়িতে আসা যাওয়া করে। এর ভেতর শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর অমানুষিক আচরণের শিকার হয়েছে। বাবুল হোসেন কয়েকবার শারীরিকভাবে তাকে মারপিট করেছে। ৪দিন আগে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার সময় পিতাকে মিনারা বলে যায়, এবার মারপিট করলে সে আর স্বামীর বাড়ি যাবে না। এরপর তার মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, তাকে গণটিপে মেরে ফেলা হয়েছে। পরে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হচ্ছে।
অপর দিকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা গ্রামে ঐশি রায় ওরফে রিয়া (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। ঐশি রায় গ্রামের স্বপন রায়ের কন্যা। মৃতার কাকা শ্যামল রায় জানিয়েছেন, বাঘারপাড়া কলেজের এইচএসসি (বিজ্ঞান) দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্রী ঐশি রায় খুলনার ফুলতলায় মামা বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে বাড়িতে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
তবে কি কারণে ঐশি রায় আত্মহত্যা করলো তা কেউ বলতে পারেন নি। একইদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির বাহারুনের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে যশোর সদর উপজেলার সীতারামপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের কন্যা আসমা খাতুন (১৫)। সে স্থানীয় একটি হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী।
স্বজনরা জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনে ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মা কুলসুম বেগম তাকে বকাবকি করে। এরপর মায়ের উপর অভিমান করে সে গলায় ফাঁস দেয়। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল হাসপাতালে মর্গে ৩টি লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।