এ যেনো এক অন্যরকম ঈদ আয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমরা যখন সবাই একে অপরের থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছি। আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্কগুলো মজবুত হওয়ার পরিবর্তে বরং দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেই সময়ে কিছু তরুণের বন্ধুত্ব হার মানিয়েছে গতানুগতিক সকল সমীকরণকে।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার অন্তর্গত মহেশপুর পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি-২০১৫ ব্যাচের বন্ধুরা প্রায় ৪০ জন মিলে ঈদের জন্য সবাই একই রকম কালারের পাঞ্জাবি বানান। তারপর ঈদের দিন সব বন্ধুরা মিলে কোলাহল ছাড়িয়ে একান্তই নিজেরা সময় কাটানোর জন্য ফিরে যান নিজেদের সেই স্মৃতিবিজড়িত কৈশোরের বিদ্যালয়ে।
তারা ঈদের দিনের সব বন্ধুরা মিলে ঘোরাঘুরির একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন। ইতোমধ্যে সেটা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। ভিডিওটা দেখার পর অসংখ্য মানুষ তাদের মন্তব্য জানাচ্ছেন এবং প্রশংসা করছেন তাদের এই অটুট বন্ধুত্বের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলানিউজ ইনফো‘কে গ্রীন ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার কবীর শাকিল বলেন, “আমাদের রহস্যময়তার পরীক্ষণে প্রাপ্ত সবচেয়ে সৌন্দর্যময় জিনিসগুলো হলো শিল্প, বিজ্ঞান এবং বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব একমাত্র সিমেন্ট যা সবসময় পৃথিবীকে একত্র রাখতে পারবে। করোনা ভাইরাসের কারণে ঘর বন্দি জীবনে পুরো সময় কাটছে টিভি দেখে আর স্মার্ট ডিভাইসে৷ দিন-রাতের রুটিন বদলে গেছে৷ অনেকের আচরণে এসেছে পরিবর্তন৷ এমন পরিস্থিতিতে ভাবলাম নতুন কিছু করি যাতে সবার সাথে সবার দেখা হয় এবং সবাই একটু রিল্যাক্স করতে পারি। এজন্য ঈদের দিন আমরা সীমিত পরিসরে ঘোরাঘুরি করি।”
তাদের এই প্রোগ্রামে যারা যারা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা সবাই এখন উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান খান, গ্ৰীন ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার কবীর শাকিল ও মোহাম্মদ মোজাহিদ।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত সরকার, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শাহারিয়ার সাকিব, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের হাসিবুর রহমান, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাদিকুল হাসান জীম।
ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ফয়সাল আহমেদ ও নুরনবী শান্ত। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ।
শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির মামুন সৌরভ, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (কুষ্টিয়া) সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব হাসান।
যশোর এম এম কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান সজল, সাকিব হাসান, মহাসিন ইসলাম, কাজি আশিকুর রহমান, সৌকত আলি। যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী ইজাজ আহমেদ, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত এম এ সুশান।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রোফেশনালস (বিইউপি) এর ডিজাস্টার এন্ড হিউম্যান সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামান সৃষ্টি। সরকারি বিএল কলেজ খুলনার হিসাববিজ্ঞান বিভাগের নাসিম মামুনুর লিমন। ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী তানভীর ইসতিয়াক সিয়াম।
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার রাকিবুল হাসান সমীত। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যাদব কুমার ঘোষ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌমিক হাসান ও ইমতিয়াজ সজল।
রাজধানীর ধানমন্ডি মডেল কলেজের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক আহমদ। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী তুষার কুমার। টেইলর ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থী আসিফ ইকবাল ফাহিম। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম দাস।