ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ – ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৬ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একজন ছাত্রী। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারিতে ধর্ষণ হয় এবং তাতে সহযোগিতার অভিযোগ এনে লালবাগ থানায় তাদের ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুনকে। এবং ধর্ষণে সহযোগী হিসাবে ভিপি নুরকে করা হয় ৩ নম্বর আসামি।
ঘটনার পর একটি বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আটক করা হয় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরকে। কিন্তু আটক করার কিছুক্ষণ পরেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী সেই ছাত্রী ভিপি নুরের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার বিস্তর অভিযোগ এনেছেন। এমনকি ৭ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে একটি ফেসবুক স্টাটাসের মাধ্যমে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছেন ঢাবির সেই ছাত্রী।
সেই ছাত্রীর ফেসবুক স্টাটাসটি হুবহু নিচে তুলে ধরা হলোঃ “যারা বলেন ভিপি নুর বিচার করার কে তারা এ কথা বলার আগে ভিপি শব্দটি বাদ দিবেন। নুরকে আমি ডাকসু ইলেকশনে ভোট দিয়েছিলাম।
যদি জানতাম তার সংগঠনের একজন একনিষ্ঠ শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তার কাছে বিচার চাইতে গিয়ে আমাকে বেশ্যা, পতিতা শুনতে হবে তাহলে সেদিন তাকে ভোটটা আমি দিতাম না।
যদি এখন বলেন ব্যক্তি নুর বিচার করার কে তখন সে উত্তর দিতে আসবো। আর যারা বলেন বিচার না করার অপরাধে ভিপি নুরের নামে মামলা হলে প্রধানমন্ত্রীর নামেও মামলা হবে। তাদের কাছে আমার প্রশ্নঃ
প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোন ধর্ষিতা মেয়ে বিচার নিয়ে গেলে বা তার কাছে বিচার চাইলে তিনি কি বিচারপ্রার্থীকে হুমকি দেন? প্রধানমন্ত্রী কি সারাদেশের তার নেতাকর্মীদের দিয়ে বিচারপ্রার্থীকে বেশ্যা, পতিতা হিসেবে প্রচারণা চালান?
যখন আওয়ামীলীগ বা বিএনপি বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলে কেউ অপরাধ করে তখন সেইসব দল অপরাধীকে তাদের দলের না বলে এড়িয়ে যায়। আমরা তখন এইসব দলের পিন্ডি উদ্ধার করি।
নতুন রাজনীতির স্বপ্ন দেখানো নুরুও তো একই পথের পথিক তাহলে? সে সরকারের সমালোচনা করে দেখে কি তার সবকিছু হালাল হয়ে যাবে?
নাজমুল হাসান সোহাগ যেখানে তার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক, যেখানে নাজমুল হাসান সোহাগ তার দলের অর্থ বিষয়ক কমিটির একজন এবং সোহাগের কাছে তার কমিটির টাকা থাকত এতদিন সেখানে সোহাগ কেবলমাত্র শুভাকাঙ্ক্ষী হয় কি করে?
ডাকসুর ভিপি পদটিকে আর কত মিথ্যাচার করে কলংকিত করতে চায় নুরু? মামলা হবার পরপর যাকে সেন্ট্রাল কমিটির চ্যাটগ্রুপ থেকে রিমুভ করা হয় সে শুধুমাত্র শুভাকাঙ্ক্ষী হয় কিভাবে?
মামলা যেদিন করা হয় সেদিন শুরুতে ভিপি নুর বলেন যে তিনি নাকি আমাকে চিনেন না। তার কয়েকঘন্টা পরে আবার বলেন যে চিনেন তবে ব্যাক্তিগতভাবে না।
ভিপি নুর যদি আমাকে নাই চিনেন তাহলে সে তার ‘Mahin Rahman’ আইডি দিয়ে আমার পোস্টে কমেন্ট কেন করেছিল? আর কমেন্টের কিছুক্ষণ পর ডিলিট কেন করেছিল?
আর সে তার ফ্রেন্ডলিস্টে আমাকে গ্রহণই বা করেছিল কি জন্য? পরবর্তীতে লাইভে এসে সে স্বীকার করে যে তাকে আমি অভিযোগ দিয়েছিলাম।
সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে খেলে সস্তা জনপ্রিয়তায় আর কত নাটক করবে এই নুর? যে নিজের সহযোদ্ধাদের চিকিৎসার টাকা মেরে খায় সে কিভাবে জাতির আশার আলো জ্বালাবে?
যে তার ক্যাম্পাসেরই ছোট বোনের ইজ্জতের বারোটা বাজায় তার অন্ধভক্তদের দিয়ে, সে কিভাবে দেশের নারীদের মঙ্গল বয়ে আনবে?
তার ভক্তরা যে অন্ধ আর দলকানা তা তো ইডেন কলেজের আপুর ছবি ভাইরালের মধ্যেই প্রমাণিত। সে আমার সাথে নীলক্ষেতে দেখা করেছিল কি না সেটার স্বাক্ষী, প্রমাণ, মামলার এজাহারে দেওয়া আছে।
আর তিনি যে আমার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য মিথ্যাচার করলেন আমি টাকা খেয়ে মামলা করেছি সে প্রমাণ কি তিনি দিতে পারবেন?
আমার আফসোস হয় যে ২৮ বছর পরে আমার প্রাণের বিদ্যাপিঠে এমন একজন ভিপি হল যে তার সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষীর সম্মান রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করল।
আমাকে অনবরত হুমকি, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয় ভীতি বন্ধ না করলে প্রয়োজনে আত্মহত্যা করবো। জনপ্রিয়তা দিয়ে হয়তো সত্যকে মিথ্যা বানাতে পারবে, কিন্তু আমার মৃত্যু আটকাতে পারবে না।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়েও আজ আমি কত অসহায়! একা একা সংগ্রাম করতে হচ্ছে মুখোশধারী অমানুষদের সাথে। তবুও আমি আশাবাদী কারণ সত্যের জয় চিরদিনই হয়। আর আমি বিশ্বাস করি আমার পথ দেখাবে আমার সত্য।”