ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করা উলফাত আরা তিন্নির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ অক্টোবর) রাতে নিহত তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত উলফাত আরা তিন্নি ঝিনাইদহ শৈলকূপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর মেয়ে। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এ মেধাবী ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) রাতে নিহত তিন্নির বড় বোন মিন্নির সাবেক স্বামী জামিরুলসহ অন্তত ১০-১২ জন তিন্নিদের বাড়িতে দুই দফা প্রবেশ করে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এসময় তারা তিন্নির ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় ও পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
জানা যায়, দুলাভাই ও তার সহযোগিদের পালাক্রমে ধর্ষণের এই ঘটনা মেনে নিতে না পারে তার কিছুক্ষণ পরেই আত্মহত্যা করে তিন্নি।
এদিকে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এটা সম্ভবত আত্মহত্যা নয়। পালাক্রমে ধর্ষণের পরে ধর্ষকরায় তিন্নিকে হত্যা করে এবং তারপর সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে যায়।
সেদিন রাত ১২টার দিকেই ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় তিন্নির মরদেহ উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা।
তবে পরিবারের দাবি, তিন্নি দুলাভাইয়ের দ্বারা এমন ধর্ষণের শিকার হয়ে লজ্জা ও ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
শৈলকুপা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মহসিন হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পড়ালেখা শেষ করা মেধাবী ছাত্রী তিন্নির মৃত্যুতে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের নামে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে শেখপাড়া গ্রামের কনুর উদ্দিনের ছেলে আমিরুল, খলিল শেখের ছেলে নাইম ও লাবিবসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে মামলার প্রধান আসামি জামিরুল এখনও পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।