bus stand - বাস স্টান্ড

রাজধানী ঢাকায় কিছু রুটে বাস বন্ধ, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

বাংলাদেশ

রাজধানী ঢাকায় কিছু রুটে বাস বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। বাসমালিকেরা সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে ভাড়া বাড়ানোর পর এবার সিটিং সার্ভিস চালু রাখতে চাচ্ছেন বাস শ্রমিকরা। এর কারণ হিসেবে মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, শ্রমিকদের যে বাড়তি আয় তা সিটিং সার্ভিস বন্ধ করলে থাকবে না। এ জন্য রাজধানীর বেশ কিছু রুটে বাস বন্ধ রাখেন চালকরা।

বুধবার রাজধানীতে মোহাম্মদপুর ও মিরপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া বেশ কিছু রুটের একাংশের গাড়ি বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষাপটে বাড়ানো হয় বাসভাড়া। তবে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সিটিং-গেটলক সার্ভিস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।

চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায় করতে মালিক সমিতির ভিজিলেন্স টিম ও বিআরটিএ অভিযানে নামে। ফলে কিছুটা বন্ধ হয় সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিল।

এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন শ্রমিকরা। কারণ তাদের বাস চালাতে হয় চুক্তি বা ট্রিপ ভিত্তিতে। এতে যদি ওয়েবিল বন্ধ বয়ে যায় তা হলে শ্রমিকদের বাড়তি আয় হয় না।

ফলে তারা সিটিং সার্ভিস বন্ধ তবে বেশ কিছু পরিবহনের শ্রমিকরা মনে করছেন, সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়ায় লাভ হচ্ছে না তাদের। ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের সঙ্গে জড়াতে হচ্ছে বাগবিতণ্ডায়।

বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট বাস কম ছিল। এতে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশায়। সুযোগ বুঝে তারাও ভাড়া বাড়িয়ে দেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন আরিফুল ইসলাম। তিনি মিরপুর সাড়ে ১১ থেকে বাংলামোটরের অফিসে আসেন। তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

তিনি বলেন, ‘সকালে বাসের জন্য প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর একটি বাসে চাপাচাপি করে উঠে দেরিতে অফিসে এসেছি।’

সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতিলিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর গণপরিবহন বন্ধ রাখেন বাসমালিক-শ্রমিকরা।

এরপর দূরপাল্লা বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা করা হয়।

আর মহানগরীর মধ্যে গণপরিবহনে ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে, বড় বাসে ২ টাকা ১৫ পয়সা ও মিনিবাসে ২ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করে বিআরটিএ।

বাংলামোটর মোড়ে আয়াত পরিবহনের চালক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এখন চার্ট অনুযায়ী ভাড়া নিলে সব টাকা মহাজনকেই দিয়ে দিতে হয়। আমাদের পকেটে কিছুই থাকছে না। এ জন্য শ্রমিকরা বাস বন্ধ রাখছেন।’

অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘সরকার যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে, সেভাবেই আদায় করতে হবে। সিটিং সার্ভিস, ওয়েবিল বন্ধ থাকবে। এগুলো চালুর দাবি অযৌক্তিক। যারা সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়কে বাস নামাবে না বা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ সবুর বলেন, ‘শ্রমিকরা ওয়েবিল চালু রাখতে চায়। তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে এ জন্য।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘চেক করার পর বাড়তি যে ভাড়া আদায় করে শ্রমিকরা সে টাকা আমরা পাই না। ওটা তারা নিয়ে নেয়। এ টাকা আমরা পাই না।’