বিশ্ববাজারে কমতে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। শুক্রবার জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ছিল ৭৮ ডলার, যা গত ৬ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মূলত ইউরোপে কোভিডের প্রকোপ বৃদ্ধির কারণেই তেলের দাম কমছে।
শীত ঘনিয়ে আসায় মহাদেশটিতে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। অনেক দেশই মহামারি নিয়ন্ত্রণে আবারও লকডাউনসহ নানা কড়াকড়ি জারি করছে। ফলে ইউরোপের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি কমে যাবে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে তেলের দামের ওপর।
করোনা পরিস্থিতি সামলাতে কঠিন কড়াকড়ি আরোপ করতে শুরু করেছে ইউরোপের কয়েকটি দেশ। পুরোপুরি লকডাউন দিয়েছে অস্ট্রিয়া।
ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানিও একই পথ অনুসরণ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। ফলে করোনা-পরবর্তী সময়ে ইউরোপে যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশা করা হচ্ছিল, তা আর সম্ভব হচ্ছে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতির গতি বাড়লে তেলের চাহিদাও বাড়ে। কিন্তু এসব কড়াকড়িতে আবারও তেলের চাহিদা কমছে ইউরোপে।
গত অক্টোবরের পর আন্তর্জাতিক বাজারে সব থেকে কম দামে জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দর ছিল ৭৯.২৮ ডলার। তবে এরপর সেই দাম বেড়ে ৮০.৫১ ডলারে পৌঁছে। শুক্রবার সেই দাম কমে নেমে এসেছে ৭৮.৪৬ ডলারে।
সম্প্রতি বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েই চলেছিল লাগাতার। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তবে বাজার স্থিতিশীল করতে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটি অনুরোধ জানিয়েছিল, যাতে দেশগুলো তাদের রিজার্ভে থাকা তেল বাজারে ছাড়তে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের এ অনুরোধ রাখে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনও। এতে বাজারে প্রচুর তেল প্রবেশ করায় দ্রুত নামতে শুরু করে তেলের দাম।
বাজার বিশ্লেষক ক্রেইগ এরলাম বলেন, বাজার এখনও ভালো অবস্থায় আছে। তবে অস্ট্রিয়ার মতো অন্যান্য দেশও লকডাউন জারি করলে এর প্রভাব তেলের বাজারে পড়বে।
আমেরিকান অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র বলেন, গ্যাসের চাহিদা কিছুটা পড়ে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়েছে। তবে জ্বালানি তেলের সরবরাহ কম থাকায় গ্যাসের দাম বাড়তে পারে।
জ্বালানি বিষয়ক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান রিস্ট্যাড এনার্জির শীর্ষ কর্মকর্তা বিজোরনার টনহাউজেন জানান, ওয়াশিংটন ও বেইজিং নিজেদের দেশের রিজার্ভ তেল বাজারে ছেড়ে দিয়েছে, যা দাম কমাতে সহায়তা করছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন আশা করছেন, ডিসেম্বরে ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল বাজারে আসবে। এটা যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকেই আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবার আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার বৃহত্তর সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমেও আসতে পারে বলে জানান টনহাউজেন।