ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থী, তবুও তার আগ্রহের অনেকটা জুড়ে আছে আঁকা-আঁকি। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের শখের বসা করা এই কাজটি করে ভীষণ আনন্দিত হন তিনি। স্বপ্ন দেখেন কার্টুনিস্ট হবেন।
বাংলা নিউজ ইনফো আজ সাক্ষাৎকার নিয়েছে তেমনই একজন শিক্ষার্থীর। মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (MIST) এর কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী “নুরাইয়া নাহরিন ফাহমিদা।” নুরাইয়া’র গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে, তিনি এখন ঢাকার উত্তরায় থাকেন।
(১) আঁকা-আঁকির প্রতি আপনার আগ্রহ কি ছোটবেলা থেকেই?
– হ্যাঁ। হাতে পেন্সিল ধরা শিখতে পারার সাথে সাথেই আঁকা আঁকি করতাম। দেয়ালে রং পেন্সিল থেকে শুরু করে সব জায়গায় আঁকতাম। ভাল ছবি না আঁকতে পারায় বেতের পিটানিও খেতে হয়েছে।
(২) প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে কখনো ড্রয়িং শিখেছেন?
– আমার বাবা ভালো ছবি আঁকেন কিন্তু তার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখার সু্যোগ হয়নি। তাই শখ করে আমাকে স্কুলে ভর্তির আগেই ছবি আঁকা শিখিয়েছেন। কিন্তু ক্লাস থ্রি পর্যন্তই শিখেছি আর্ট স্কুলে।
(৩) ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে কি হওয়ার ইচ্ছে ছিলো? এবং কেনো?
– মনে হত চারুকলায় পড়ব। একটু বড় হয়ে মনে হল ডিজনির (Disney) কার্টুন বানাবো।
(৪) অবসরে কি কি করেন?
– সত্যি বলতে আমি খুবই ঘুম পাগল। সময় পেলেই ঘুমাই। অবসরে মুভি দেখি, ছবি আঁকি, নতুন নতুন শিল্পকর্ম দেখি আর নিজেও চেষ্টা করি।
(৫) পরিবার থেকে কি আঁকার জন্য কোন উৎসাহ অথবা বাঁধা পান?
– ছবি আঁকার জন্য খুব ছোট থেকেই বাবা আম্মুর উৎসাহ পেয়েছি। কিন্তু পড়ালেখা, বোর্ড পরীক্ষা, ভর্তি যুদ্ধ সহ নানা কারন ছবি আকার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
(৬) বিশ্ববিদ্যালয় তো এখন বন্ধ। লকডাউনে বাসায় সময় কাটাচ্ছেন কিভাবে?
– বডি পেইন্ট (body paint) ট্রাই করেছি। জানি না কেমন হয়েছে, কিন্তু আমি সন্তুষ্ট। কিছু ভালো মুভি দেখলাম।
(৭) বডি পেইন্ট এর প্রতি আগ্রহ কিভাবে?
– এক আপুকে দেখি তখন থেকেই। তারপর এটা ইন্টারনেটে সার্চ করি। অবাক লাগতো এটা কিভাবে সম্ভব। তারপর নিজেই ট্রাই করি। আমারতো কার্টুনিস্ট হবারও ইচ্ছে আছে।
(৮) মহামারী পরিস্থিতি ভালো হলে, সর্বপ্রথম কোথায় ঘুরতে যেতে চান?
– আসলে বাসা থেকে বাইরে কবে যাব সেই জন্যে অপেক্ষায় আছি। সবকিছুর আগে এক দৌড়ে বার্গার খেতে যাব। বন্ধু বান্ধবদের মিস করছি খুব বেশি, দেখা করবো!
(৯) ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট তার পরেও বিজ্ঞানের টেকনোজলি সম্পর্কিত কাজ বাদ দিয়ে আঁকার প্রতি আগ্রহ কেনো?
– আঁকার আগ্রহ তো সেই ছোটবেলা থেকেই। আঁকা-আঁকি আমার শখ, এটাকে প্রফেশন বানালেই এই শখ দেখা যাবে বোঝায় পরিনত হবে।
(১০) আঁকা-আঁকি নিয়ে আপনার কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে?
– অ্যানিমেটর হওয়ার ইচ্ছা আছে। আর ভবিষ্যতে গ্রাফিকস ডিজাইন, অ্যানিমেশন, ডিজিটাল আর্ট এর ইচ্ছেও আছে। বাকিটুকু আল্লাহ ভরসা।
(১১) আপনি কি মনে করেন একাডেমিক শিক্ষাটাই জীবনের সবকিছু?
– আমি মনে করি একাডেমিক পড়ালেখাটা ঠিক রেখে পাশাপাশি নিজের আগ্রহ যেটাতে আছে তার জন্য পরিশ্রম করাটাই বুদ্ধিমানের।
(১২) সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম আপনার আঁকা ছবি অনেকেই পছন্দ করেছে। আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
– আমার জন্য দোয়া করবেন। শিল্প ভালোবাসবেন। শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখবেন। সুস্থ শিল্পের অনেক বেশি প্রয়োজন বর্তমানে।